তৃতীয় শ্রেণীর এক শারীরিক প্রতিবন্ধি ছাত্রীকে মাথায় হাতুড়ি মেরে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার থানাঘাটা এলাকার মাধব স্বর্ণকারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষুব্ধ জনতা ঘাতক, তার বাবা ও মাকে আটক করে করেছে।
নিহত প্রতিবন্ধির নাম চুমকি খাতুন (২০)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার থানাঘাটা গ্রামের রেজাউল ইসলামের মেয়ে ও সাতক্ষীরা সুইদ খাদিমুন্নেছা হানিফ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শ্রেণীর ছাত্রী।
ঘাতকের নাম ইলিয়াস হোসেন। সে একই গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে। গণধোলাইয়ের শিকার ইলিয়াসকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার থানাঘাটা গ্রামের শহীদুল ইসলামের স্ত্রী ছখিনা খাতুন জানান, থানাঘাটা এলাকার মাধব স্বর্ণকারের বাড়ির পাশে তিন রাস্তা মোড়ে শনিবার সকাল ৯টা থেকে মাহফিল শুরুর কথা ছিল। সে কারণে সকাল পৌনে ৯টার দিকে তার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধি বোন চুমকি ওই মাহফিল অনুষ্ঠানে খাবার কিনতে যাচ্ছিল।
৯টার দিকে সে মাধব স্বর্ণকারের দোকানের সামনে পৌঁছাতেই পিছন দিক থেকে তারে বাড়ির পাশের ইলিয়াস হোসেন হাতুড়ি দিয়ে বোন চুমকির মাথায় সজোরে আঘাত করে।
স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চুমকি মারা যায়। চুমকির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইলিয়াস, তার বাবা আকরাম হোসেন, মা মনোয়ারা খাতুন, বোন নার্গিস ও ভগ্নিপতি লিটন, ভাগ্নে শান্ত ও শাওনকে আটক করে গণধোলাইয়ের পর র্যাব সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।
ছখিনা খাতুন আরো জানান, ইলিয়াস একজন মাদকাসক্ত যুবক। তার বাবা এক সময় ঢাকাগামি পরিবহনের চালক ছিল। ইলিয়াস সম্প্রতি পরিবহন চালকের সহায়তাকারি হিসেবে কাজ করতো। মাদকাসক্তির কারণে ইলিয়াস ইতিপূর্বে নিজের মাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে। এমনকি তার (ছখিনা) ভাগ্নে আল আমিনসহ কয়েকজনকে মারপিট করে ইলিয়াস। উৎপাত সহ্য করতে না পেরে পরিবারের লোকজন তাকে ধরে পুলিশের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। সম্প্রত তার মা মনোয়ারা ও বোন নার্গিস তাকে জামিনে মুক্ত করে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মমতাজ মুজিবর জানান, ভারী জিনিস দিয়ে চুমকির মাথায় আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ জনিত কারণে সে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মারা গেছে।
সাতক্ষীরা সুইদ খাদিমুন্নেছা হানিফ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, চুমকি তার বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। ঘাতক ইলিয়াস একজন মাদকাসক্ত।
সাতক্ষীরা সদরন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তারা কাউকে আটক করেননি। তবে র্যাব কাউকে আটক করতে পারে।
খুলনা র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা শাখার সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ ফয়সাল তারভির জানান, থানাঘাটায় এক শারীরিক প্রতিবন্ধিকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি ঘাতকসহ তার পরিবারের কয়েকজনকে ধরে রাখলে র্যাব যেয়ে তাদেরকে ক্যাম্পে নিয়ে আসে।