নিজেকে উজাড় করে দিতে চান মিরাজুল
ভুটানের বিপক্ষে দু’টি প্রীতি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন সাফজয়ী অনূর্ধ্ব-২০ দলের চার খেলোয়াড়। এদের মধ্যে সাফে ৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা মিরাজুল ইসলাম কোনোদিন ক্যাম্পে ডাক না পেয়েও সরাসরি ঢুকে গেছেন জাতীয় দলে। ডিফেন্ডার শাকিল আহাদও তাই। চন্দন রায় অবশ্য এর আগেই জাতীয় দলে খেলেছেন, রাব্বি হোসেন রাহুলও ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন। এই চারজনই গতকাল দলের সঙ্গে পৌছে গেছেন ভুটানে। আগামী ৫ ও ৮ই সেপ্টেম্বর থিম্পুতে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মিরাজুল জানালেন, সুযোগ পেলে নিজেকে উজার করে দিতে চান তিনি।
এই চারজনের মধ্যে মাঠে যতটা চঞ্চল, ব্যক্তি জীবনে সম্পূর্ণ বিপরীত মিরাজুল ইসলাম। একেবারে ধীরস্থির। বয়স বিশের নিচে হলেও চিন্তা-চেতনার পরিপক্বতা অনেক।PauseMute
Loaded: 16.17%
Remaining Time -9:37Close Player
বিজ্ঞাপনজাতীয় দলে ডাক পেয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও কণ্ঠে পরিমিতিবোধ। তিনি বলেন, ‘একটা স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলে ডাক পাওয়া, সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন নিজেকে আরও বেশি এগিয়ে নিতে হবে। গোল করতে চাই বা এত গোল করবো এ রকম কোনো লক্ষ্য আপাতত নেই। প্রথম লক্ষ্য খেলা, তারপর নিয়মিত হওয়া।’ জাতীয় দলে এর আগেও ডাক পেয়েছিলেন মিরাজুল। সেই বার অবশ্য ক্যাম্প করা হয়নি। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘একবার জাতীয় দল ঘোষণা হলেও করোনার জন্য ক্যাম্প আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। সেই সময় আমি দলে ছিলাম।’ ঝালকাঠিতে জন্ম নেওয়া মিরাজুল এখন বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন সম্ভাবনার নাম। বিকেএসপিতে ফুটবলের হাতেখড়ি হলেও বাফুফের এলিট একাডেমি থেকেই মূলত তার পথচলা। বাফুফের এলিট একাডেমি থেকে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। অনেক ফুটবলারের আইডল মেসি-রোনলোদা-নেইমার। মিরাজুল এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো খেলোয়াড়কে আমার আইডল মানি না। আমার একমাত্র আইডল হযরত মুহাম্মদ স.।’ মিরাজুল অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। তার এই সাফল্য পুরোটাই আল্লাহর দান বলে মনে করেন। মোহামেডান ক্লাব মিরাজুলকে নিতে বাফুফেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিল। মাঝে ডাক এসেছিল ইউরোপে খেলার। শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। এই প্রসঙ্গে মিরাজুল বলেন, ‘আমার ইউরোপে খেলার একটি সম্ভাবনা ছিল। দুর্ভাগ্য সেই সময় আমি মাঠের বাইরে ছিলাম। তাই আর যাওয়া হয়নি।’ চলতি মৌসুমে আবাহনীতে নাম লিখিয়েছেন মিরাজুল ইসলাম। এবার বিদেশি ছাড়া লীগে খেলবে আবাহনী। এটা লোকাল ফুটবলারদের প্রমাণের বড় সুযোগ জানিয়ে মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আবাহনীতে কোচ কে আমি জানি না। তবে যেই কোচ হোন, আমি যদি সুযোগ পাই চেষ্টা করবো সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করার।’ সাফ অনুর্ধ্ব-২০ ফাইনালে ম্যাচের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট প্রথমার্ধে বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে গোল। বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ জোরালো ফ্রি-কিকে বাংলাদেশকে লিড এনে দিয়েছিলেন মিরাজুল। সেই গোল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি ফ্রি-কিক নিতে পছন্দ করি। প্র্যাকটিসেও এমন শট নিয়েছি। ওই দিনও সেভাবে নিয়েছিলাম, গোল হবে বিশ্বাস ছিল তবে এত সুন্দরভাবে সেটা ভাবিনি। গোলটি দেখতেও ভালো লাগছিল।’ ঝালকাঠির গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলেটি এখন বয়সভিত্তিক পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। নিজের চেষ্টা ও বাবা-মায়ের দোয়াতেই এই অর্জন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আসলে আমি সব সময় চেষ্টা করি। চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। আমার বাবা-মা’র দোয়া সঙ্গী। যেদিন আমার খেলা মা রোজা রাখেন। আমিও নিয়মিত নামাজ পড়ি। আল্লাহ সহায় বলেই আমার এই পুরস্কার ও অর্জন।’