রাসেল আহমেদ: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রাণ ঝরার পর থেকেই ইমেজ সংকটে বাহিনীটি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। গঠন করা হয়েছে পুলিশ কমিশন। বাহ্যিক পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইজিপি থেকে কনস্টেবল— সবার একই ধরনের পোশাক পরিধান এবং মনোগ্রাম ও ক্যাপ থেকে নৌকা চিহ্ন সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কেবল পোশাকে পরিবর্তন নয়, দরকার মানসিকতায় পরিবর্তন। না হলে কেবল অর্থের অপচয় হবে। তারা মনে করিয়ে দেন, বর্তমানেও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সদস্যদের পোশাক প্রায় একই।
পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান বলেন, ব্যাটালিয়ন পুলিশ, জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ—তিনটা আইন দ্বারা পরিচালিত, যদি এক করে ফেলা হয় তাহলে মানুষ তো বিভ্রান্ত হবে। রাস্তায় পুলিশ দেখলে ভাববে যে তার হয়তো দরকার ব্যাটালিয়ন পুলিশের, সে ভেবে ফেলতে পারে এটা জেলা পুলিশ। সেজন্য পুলিশের সব ব্রাঞ্চকে বিশেষ করে তিনটা ব্রাঞ্চের সবাইকে একই পোশাকে নিয়ে আসলে পরে বোধহয় এ নিয়ে বিভ্রান্তি বাড়তে পারে।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সবার আগে পরিবর্তন আনতে হবে বাহিনীর মানসিকতায়। সাধারণ মানুষের প্রতি বদলাতে হবে পুলিশের আচরণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, পোশাক পরিবর্তন করলে পুলিশের সবাই যে ভালো হয়ে যাবে এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। সুতরাং যে জায়গা থেকে প্রত্যাশিত পুলিশিং ব্যবস্থার সৃষ্টি হতে পারে সেটি প্রশিক্ষণ, তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা, তার কমকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
বিদ্যমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বড় বাজেটের প্রকল্পের চেয়ে সেবামুলক পরিবর্তনে জোর দেয়ার পরামর্শ তাদের।