June 20, 2018
সাতক্ষীরায় পাট ক্ষেতে পোকার আক্রমণ: লক্ষ মাত্রা অর্জনে সংশয়
আলোর পরশ নিউজ:সাতক্ষীরা: প্রচন্ড গরম ও পর্যাপ্ত পানির অভাবে জেলার পাট হুমকীর মুখে পড়েছে। পানির অভাবে পাটক্ষেত ফেটে যাচ্ছে। ক্ষেতের বেশির ভাগ অংশে পাট মারা যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেতে পাটের পাতা কুকড়িয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা চাতক পাখির মত বৃষ্টির জন্য আকাশ পানে চেয়ে আছে। আষাঢ়ে বৃষ্টি নামবে এমন আশায় পাটক্ষেত গুলির চারিপাশে আইল বেধেঁ পানি ধরে রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছে পাট চাষীরা। নিম্নমানের ভেজাল বীজ, প্রাকৃতিক বিরূপ প্রভাব এবং স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে সাতক্ষীরায় পাটের এমন অবস্থা বলে জানালেন পাট চাষীরা। পাট ক্ষেত পোকার আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। মাঠের পর মাঠ পাট ক্ষেত হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। এতে কয়েকশ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছে পাটচাষীরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জেলার ১২ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে এক লাখ ৩৭ হাজার ৬২৪ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে ২০১৬-১৭ খরিপ -১ এ জেলাতে ১১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে এক লাখ ২৭ হাজার ৯৩০ বেল পাট উৎপাদন হয়েছিল। যার মধ্যে সদর উপজেলার চার হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে ৫২ হাজার ৫৮০ বেল, কলারোয়া উপজেলার তিন হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার ৯৯০ বেল, তালা উপজেলার তিন হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ৩৬ হাজার ৮৫০ বেল, দেবহাটা উপজেলার ১০৪ হেক্টর জমিতে এক হাজার ১৪০ বেল, কালিগঞ্জ উপজেলার ১৮৫ হেক্টর জমিতে দুই হাজার ৩৫ বেল, আশাশুনি উপজেলার ১২০ হেক্টর জমিতে এক হাজার ৩২০ বেল ও শ্যামনগর উপজেলার এক হেক্টর জমিতে ১১ বেল পাট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এসব জমির অধিকাংশতেই আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট। সূত্রমতে ২০১৫-১৬ খরিপ -১ এ সাতক্ষীরা জেলার ছয় উপজেলায় পাটের উৎপাদন ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৮ বেল । যার মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৫০ হাজার ৫৫৫ বেল, কলারোয়ায় ৩০ হাজার ৭১২, তালায় ৩৩ হাজার ৯২৫, দেবহাটায় ৯৪০, কালীগঞ্জে ৮২০, আশাশুনিতে ১ হাজার ৫০ ও শ্যামনগরে ৫৫ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। কয়েক জন পাটচাষীর সাথে কথা হয়। তারা জানান, বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেতে পাটের পাতা কৃকড়ে যাচ্ছে এবং বিছা পোকায় পাতা খেয়ে ফেলছে। এতে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ায় প্রত্যাশা পূরণে সংশয় দেখা দিয়েছে। সবুজের পরিবর্তে পাট ক্ষেতের রং হয়ে গেছে লালচে ও হলুদ বর্ণের। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এসব চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অথচ স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোন খোঁজ খবর রাখেন না বলে একাধিক কৃষকের অভিযোগ। গতবছর পাটের দাম বেশী পাওয়ায় কৃৃষকদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তারা জানান, সার, বীজ ও কীটনাশকের সঙ্কট না হলে সাতক্ষীরাতে পটের উৎপাদন ভাল হবে। দেশি পাটের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য আবিষ্কার, পাটপণ্যের দ্বিগুণ রপ্তানি বৃদ্ধি পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলকসহ ব্যবহারে বহুমাত্রিকতা এলেও প্রতিবছর সারাদেশে কমছে পাট চাষ। কমছে চাষের জমিও। উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতার কারণে কৃষক নিরাশ। চাহিদা অনুযায়ী দাম না পেয়ে কৃষক বছরের পর বছর ঠকেই যাচ্ছেন। কিন্তু সাতক্ষীরাতে পাটের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তবে পাটের আবাদ না বাড়লেও খাতা কলমে বেড়েছে সাতক্ষীরাতে পাটের আবাদ। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, সাতক্ষীরায় খুব ভাল মানের পাট উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে, কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি,উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। |
|
সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত |
e-mail: alorparosh@gmail.com- -- |