August 20, 2018
রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা: ঈদ উদযাপনে জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ

আলোরপরশ ডেস্করিপোট: সাতক্ষীরা: রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার অর্থাৎ ১০ জিলহজ সাতক্ষীরাসহ সারা দেশে উদযাপিত হবে এবারের ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরা তাদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ঈদ নামাজ ও পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে পালন করবে ধর্মীয় দ্বিতীয় বৃহত্তম এ উৎসব। ঈদ উদযাপনে সাতক্ষীরা জেলাতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার ঈদগা ময়দান সমূহ নামাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঈদের দিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা থাকায় মসজিদ গুলো ঈদ নামাজের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলার ১৬ লক্ষাধীক ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবারের পবিত্র ঈদুল আজহা উৎসবে মেতে উঠবে।
প্রধান প্রধান সড়কসহ ঈদগা ময়দানের প্রধান ফটকে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে ঈদ কার্ড বিতরণ, দেওয়ালে পোষ্টার সাটানো সহ ভোটারদের মণ আকৃষ্ট করতে নানা মুখি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গরীব ,অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। যদিও না পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে অনেকের।
ঈদ মানেই আনন্দ। প্রিয়জনদের সঙ্গে সে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই দূর-দূরান্ত হতে পথের ক্লান্তি ভুলে সাতক্ষীরাতে ছুটে এসেছেন। ছোট-বড় সবারই অধীর অপেক্ষা এখন ঈদের দিনটির জন্য।ইতিমধ্যে কোরবানির পশু কেনা সম্পন্ন হয়েছে।
হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীক নিদর্শন হিসেবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে থেকে শুরু হয় কোরবানির এ প্রচলন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রাণপ্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। ওই অনন্য ঘটনার স্মরণেই ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির এ রেওয়াজ চালু হয়।
মহান আল্লাহপাকের প্রতি আনুগত্য এবং তাঁরই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এ ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিকতায় মুসলিম বিশ্বে কোরবানী ও ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার করা ও হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বুধবার সকালেই মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে যাবেন ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য। নামাজের খুতবায় তুলে ধরা হবে কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে আদায় করবেন ঈদের নামাজ। শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন কোলাকুলির মাধ্যমে। নামাজ শেষে আল্লাহতায়ালার উদ্দেশে করা হবে পশু কোরবানি। সরকারি হিসাব মতে জেলাতে এবছর সব মিলিয়ে ৭৮ হাজার পশু কুরবাণির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
পবিত্র এ উৎসব উপলক্ষ্যে দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিনোদনমূলক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলার বিনোদন পার্ক,সিনেমাহল সহ দর্শনীয় স্থান সমূহ বিশেষ ভাবে সজ্জ্বিত করা হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভাগুলো ও ইউনিয়ন পরিষদ ঈদ উদ্যাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার উদ্যোগে বর্জ্য অপসারণে জন্যপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত রেখেছে। ঈদের দিন বেলা দু’টোর পর থেকে পরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যে পৌর মেয়র তাজকিম আহম্মেদ চিশতি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জেলা কারাগারসহ,সরকারি হাসপাতাল, শিশুসদন, সহ বিভিন্ন স্থানে অসহায় ও দুস্থদেও মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আহলে হাদিসের জামাত সকাল ৭টা ১৫ মিনিট, সাতক্ষীরা পাওয়ার হাউজ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা, সাতক্ষীরা কালেক্টরেট জামে মসজিদে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে জেলার সবকটি স্থানে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে সূত্র জানায়।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --