April 13, 2018
পুকুর শুকিয়ে যাওয়াতে সুপেয় পানির অভাবে নাকাল সাতক্ষীরা ২২ লক্ষ মানুষ**প্রভাব শালীদের দখলে থাকায় সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান *খনন ও সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
*৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুকুর সংস্কারের কাজ চলছে এর মধ্যে ৭৩টি জলাশয় ,খনন,পুনঃখনন ও সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পরিষদ। ৪৮টি জলাশয়ের টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। ৯টি টেন্ডারের অধীনে ৩০টি জলাশয়ের কাজ চলছে। দুটি জলাশয় প্রভাবশালীদের দখল মুক্ত করতে না পারায় বাকি ২৮টি জলাশয়ের কাজ চলছে। জলাশয় গুলোর কাজ সমাপ্ত হলে লক্ষাধীক মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা পাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। জলাশয় গুলো যুগ যুগ ধরে প্রভাব শালীদের দখলে থাকায় তা উদ্ধার করতে হিমশীম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পুকারের আয়তন ও গভীরতা পরিবর্তন করে জলাশয় গুলো প্রভাব মুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি পুকুর, দীঘি ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প জেলা পরিষদের উদ্যোগে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পে জেলা পরিষদের অধীন ৭৩টি পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন করা হবে। এতে সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বেদখল হয়ে যাওয়া পুকুর ও দীঘি উদ্ধার হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরায় দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা সুপেয় পানির উৎস গুলো দখল মুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে জেলা পরিষদের সব পুকুর, দীঘি ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প ২০১৭-১৮ গ্রহণ করা হয়। গত জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটির অধীনে সাতক্ষীরা সদর, কলরোয়া, তালা ও দেবহাটায় দুটি করে জলাশয় পুনঃখনন করা হবে। এছাড়া কালীগঞ্জে ১১টি, আশাশুনিতে ২৪টি ও শ্যামনগরে ৩১টি পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন করা হবে। সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর ইউনিয়নের চাঁদপুর মৌজাতে দশমিক ৭৫ একর জমিতে ৫.৬ মিটার গভীরতায় একটি পুকুর খনন চলছে। এছাড়া ফিংড়িতে ১ দশমিক ০৯ আয়তনে ৫.৬ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট দুটি পুকুর সংস্কারের কাজ চলছে। তালার খেশরাতে ১ দশমিক ১৫ আয়তনে ৫.৯ মিটার গভীরতা এবং ইসলামকাটিতে ১ দশমিক ২ আয়তনে ২.১০ মিটার গভীরতায় দুটি পুকুর খননের কাজ চলছে। কালিগঞ্জের তারালির বাজার গ্রাম,মথেরুশপুরে উজমারি,ধলবাড়িয়ার গান্দুলিয়া,রঘুনাথপুর,ভাড়া শিমলার গোনাটিকাটি,দেয়া,উকশা এবং চাম্পাফুলগ্রামে ১১টি জলাশয়ের কাজ চলছে। দেবহাটার গগন্নাথপুর ও পাইখালিতে ২টির কাজ চলছে। প্রকল্প অনুযায়ী পুকুরের আয়তন ও গভীরতা অনুযায়ী একটি জলাশয়ের কাজ ঠিক মত হচ্ছে না। খনন ও সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প অনুযায়ী জলাশয়ের যে আয়তন দেখানো হযেছে বাস্তবে তার মিল নেই। কারণ প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলকৃত সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ বছর ধরে সরকারী জমিতে আধা পাকা ও পাকা বাড়ি ঘর করায় বসতিদেরকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ জানান। খনন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান,আমিন এন্ড ব্রার্দস,এম.এম.বির্ল্ডাস,আরাধন ইন্টাপ্রাইজ,এমএসএবিটিসিবিবিএল । কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে,প্রভাবশালীদের কাছ থেকে তাদের পক্ষে দখল মুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছ। যতটুকু দখল করা সম্ভব হচ্ছে সে অংশে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ১৩০টি পুকুর ও দীঘি রয়েছে। এর মধ্যে আপাতত ৭৩টি পুনঃখনন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৯ সালের জুনে। তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জেলার সুপেয় পানির সংকট কিছুটা হলেও কমবে। বিশেষ করে শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষ বেশি উপকৃত হবেন। প্রকল্পের অধীনে যতগুলো পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন হচ্ছে, তার মধ্যে ৬৬টিই এ তিন উপজেলার। সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জেলার মানুষের পানির কষ্ট দূর হবে। তাছাড়া দীর্ঘদিন বেদখলে থাকা সরকারি জলাশয়গুলো উদ্ধার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ |
|
সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত |
e-mail: alorparosh@gmail.com- -- |