February 25, 2018
টক অব দ্য সাতক্ষীরা: আলোচিত ছাত্রলীগ নেতাএএসআই রউফ সোনা ছিনতাইয়ের পর গরু বিক্রির টাকা ছিনতাইকারী!

আলোর পরশ নিউজ::চোরাচালানের তিন কেজি সোনা ছিনতাইয়ের  ১৯ মাস পর এবার গরু বিক্রির নয় লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক হয়েছেন এএসআই আব্দুর রউফ। সাতক্ষীরায় বাড়ি হওয়ায় তাকে নিয়েই যত আলোচনার ঝড়। তিনি এখন ‘টক অব দ্য ডিস্ট্রিক্ট’।

এএসআই রউফ তালার সাবেক  ছাত্রলীগ নেতা ছিল। তার আর এক ভাই বর্তমানে থানা যুবলগর বড় নেতা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এএসআই রউফ একের পর এক অপকর্ম ঘটিয়ে যাচ্ছে।

আলোচিত পুলিশ সদস্য আব্দুর রউফ বিশ্বাস এএসআই (সহকারি উপ-পরিদর্শক ) পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা। তার বর্তমান কর্মস্থল খুলনার ডুমুরিয়া থানা। গ্রামের বাড়ি তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজার।

আব্দুর রউফ বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে যেসব অপরাধে নিজেকে জড়িয়েছেন তার প্রতি ঘৃণা ছুড়ে দিচ্ছেন সাতক্ষীরার মানুষ। তারা বলেছেন, আব্দুর রউফ বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমুর্তি বিনষ্ট করেছেন। তিনি সাতক্ষীরাবাসিরও মুখে কালিমা লেপন করেছেন।

উল্লেখ্য যে, আব্দুর রউফ বিশ্বাস গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ব্যবসায়ীদের গরু বিক্রির ৯ লাখ টাকা ছিনতাই মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি ও তার অপর তিন সহযোগী কনস্টেবল নাদিম, ট্রাকচালক মনির সরদার ও তার সহযোগী রাজু ঘোষ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছয় লাখ টাকাও।

এদিকে অনুসন্ধানে আবদুর রউফের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসেছে আরেক কাহিনী। অবশ্য সে ঘটনায় তিনি আটক হয়েও পুলিশের একটি অসাধূ চক্রের সহায়তার  রক্ষা পেয়ে যান।

পেছনের আলোচিত ঘটনাটি ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর তারিখের। যশোরের কেশবপুরের স্বর্ন চোরাচালানি বিপ্লব চ্যাটার্জী তার স্বীকারোক্তি মতে তিন কেজি স্বর্ণ ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে সাতক্ষীরা আসছিলেন। তার কাছ থেকে সেই সোনা ছিনতাইয়ের লক্ষ্যে এএসআই আব্দুর রউফ ও তার সহকর্মী কনস্টেবল মারুফ তাকে কৌশলে নিয়ে আসেন তালা উপজেলার সেনেরগাতি বাজারে। এসময় গ্রামবাসি তাদের গণপিটুনি দিয়ে পাটকেলঘাটা থানা পুলিশে সোপর্দ করে। আব্দুর রউফ সে সময় ছিলেন ঝিনাইদহ জলার হরিনাকুন্ডু থানার এএসআই। ছুটিতে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় এসে এ ঘটনা ঘটান তিনি। অভিযোগ রয়েছে চোরাচালানি বিপ্লবের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া তিন কেজি সোনা পুলিশ কর্মকর্তারা হজম করে দিয়ে রউফ ও মারুফকে তাদের কর্মস্থলে পাঠিয়ে দেন। পরে বিপ্লবকে ২১১ পিস ইয়াবা দিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আব্দুর রউফ সে যাত্রা এভাবেই পার পেয়ে যান।

পুলিশের এএসআই রউফের এই দুই ঘটনা সাতক্ষীরায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম  দিয়েছে। রউফের নিজ এলাকা  তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে রউফ যা করেছেন তা ঘৃণ্য অপরাধ। আগের ঘটনা থেকেই তার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত ছিল। আমি এর বিচার দাবি করি।জেলা কৃষক লীগ সভাপতি বিশ্বজিত সাধু বলেন, ‘তিনি  বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমুর্তি নষ্ট করেছেন। তাকে যথাযথ শাস্তি পেতে হবে’। আব্দুর রউফের সহোদর তালার বালিয়াদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুর রব পলাশ বলেন, ‘ভাইয়ের ঘটনায় আমরা বিব্রতকর অবস্থায় আছি। বিয়ের পর থেকে তার সাথে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক অনেকটাই বিচ্ছিন্ন’।

দলীয় কোটায় চাকুরি পান এএসআই রউফ । পাটকেলঘাটা বাজারে তার নামে -বেনামে কয়েটি দোকান আছে। কয়েক কোটি টাকার মালিক তিনি। পাটকেলঘাটায় আসলে তিনি বিলাশ বহুল গাড়ী চড়েন। পাটকেলঘাটা থানার পাশেই তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান । সেই সুবাদে থানার অনেক কর্মকর্তার সাথে তার ধহরাম মহরাম। দলীয় অনেক মন্ত্রী এমপির সাথে তার উঠাবসা। ডিউটি রত অবস্থা ছাড়া তিনি যখন বাড়িতে বেড়াতে আসতো তখন তার কাছে থাকতো পুলিশি ড্রেস সহ কোমরে গেজা থাকতো সরকারী অস্ত্র। এলাকাতে তার বিরুদ্ধে অভীযোগের অন্ত নেই। ভয়ে কেউ মুখ খুলতো না।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --