January 5, 2019
যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করলেন আওয়ামী লীগ নেতা

আলোর পরশ :ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডেু চুরির অভিযোগে রানা নামের এক যুবককে গাছে উল্টায়ে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও থেকে নির্যাতনের ঘটনা জানাজানি হয়। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক দু’দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে।

রানা হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক ওমর আলী ছেলে। ঘটনার দিন স্থানীয় আওয়ামীগ নেতা শাহিনুর রহমান তুহিনের নেতৃত্বে রানার উপর এ নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনকারী শাহিনুর রহমান তুহিন তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন (বর্তমান একটি গ্রুপের সভাপতি) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। (যদিও তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দুটি কমিটি আছে।)

তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনজের আলী জানান, ভোটের দু’দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে মাঠে কাজ করছিল রানা। এসময় শাহিনুর রহমান তুহিন নামের এই আওয়ামী লীগ নেতা টেলিভিশন চুরির অভিযোগে রানাকে ধরে নিয়ে আসেন। এরপর গ্রামের একটি গাছে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করে। ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না।

স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি আরো জানান, নির্যাতনের পর পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে এখন কোথায় তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বা তারা কোথায় আছে তা বলতে পারেননি তিনি।

অভিযুক্ত শাহিনুর রহমান তুহিন জানান, ভোটের ৫ দিন আগে নির্বাচনী ক্যাম্পের টিভি চুরি হয়ে যায়। এসময় আমরা জানতে পারি রানা টিভি চুরি করেছেন। এসময় তাকে ধরে পুলিশে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু উদ্ধার না হওয়ায় আমি তাকে সামান্য মেরেছিলাম। তাকে আমি চিকিৎসাও করিয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিষয়টা ভিন্নভাবে তুলে ধরে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, রানা বিএনপির দুর্ধর্ষ ক্যাডার ছিল। এছাড়া পেশাদার চোর বলে সবাই তাকে চেনে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলাও আছে বলেন জানান অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের এই নেতা তুহিন।

তবে নির্যাতনের শিকার রানার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এঘটনায় হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, ভোটের কয়েক দিন আগে স্থানীয় আওয়ামলীগ নেতা তুহিন রানা নামের এই ব্যক্তিকে ধরে থানায় এনেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিস থেকে টেলিভিশন চুরি করেছে। সে সময় আমরা তাকে টেলিভিশন উদ্ধারের জন্য চেষ্টাও করেছিলাম কিন্তু না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় তাকে ফেরত দেয়া হয়। এরপর কী হয়েছে আমার জানা ছিল না। তবে সাংবাদিকদের কাছ থেকে নির্যাতনের ঘটনা জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর সঠিক ঘটনা জানা যাবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --