October 9, 2018
২১ আগস্ট মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি: মির্জা ফখরুল

 আলোরপরশ ডেস্করিপোটঃ একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আওয়ামী লীগই সুবিধাভোগী বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বলেছেন, এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ২১ আগস্টের মামলার রায় কাল (বুধবার) হতে পারে। দেখেন এই মামলার রায় নিয়ে বহু ঘটনা ঘটেছে, বহু কথা বলা হচ্ছে। প্রকৃত সত্যটা কেউ উৎঘাটন করতে চাচ্ছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি- তারেক রহমান, আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আমাদের বিএনপির কোনো লোকই জড়িত ছিলো না। কারণ যেকোনো হত্যাকাণ্ডের একটা মোটিভ থাকবে। এই মোটিভে ব্যানিফিসারী কে হয়েছে? আওয়ামী লীগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ এটাকে ইস্যু করে বিএনপিকে ধ্বংস করছে, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে, বিএনপির বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছে।

মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মামলার সঠিক তদন্ত যদি করা হতো, সঠিকভাবে যদি দোষী ব্যক্তিদের বের
করা যেতো তাহলে আসল সত্য বেরিয়ে আসতো। রাজনৈতিকভাবে তারেক রহমানসহ নেতাদের জড়িয়ে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছেন যে,
সরকার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলায় তাদেরকে জড়িয়েছে। এখন বিচার ব্যবস্থা যেটা করা হয়েছে- আমার কথা নয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আজকেও ভয়েস অব আমেরিকাতে যে বিবৃতি দিয়েছেন সেখানে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। সবচেয়ে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হয়েছে লোয়ার জুডিশিয়ারি। কারণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে এটি রয়েছে। কে প্রমোশন পাবে, কে হাইকোর্টে যাবে, কাকে বেনিফিট দেয়া হবে- এই তো করা হচ্ছে করছে সরকার। এসব করে বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় তদন্তভার অবসরপ্রাপ্ত কাহার আকন্দের ওপর ন্যস্ত হওয়ার পর মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত জেহাদের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নাজিম উদ্দিন আলমের পরিচালনায় সভায় সাবেক ছাত্র নেতা শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জনগণকে বাদ দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীতের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়ে গেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের পত্রিকায় আছে- অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পেনশন বাড়িয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনার এখন আর জনগণের
প্রয়োজন নেই। আমলা-পুলিশ-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বন্দুক-পিস্তলধারী লোকজন, সরকারি লোকজন হলে তার চলে যায়।

তিনি বলেন, সঙ্কট গভীর থেকে গভীরতম। আপনার জাতির অস্তিত্ব থাকবে কিনা, একটা স্বাধীন দেশে বাস করতে পারবেন কিনা, একটা মুক্ত সমাজে বাস করতে পারবেন কিনা- এ বিষয়গুলো আজকে সামনে চলে আসছে। এ কেমন রাষ্ট্র আমাদের? যে রাষ্ট্র আমাদের স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়ে যাবে। এখনো যদি আমরা মুখ বুজে পরে থাকি, আমাদের যে বীরেরা ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে হটিয়েছে তাদের নেতৃত্বে আমি মনে করি সবাইকে বেরিয়ে আসা দরকার, প্রতিবাদ করা দরকার। প্রতিবাদের ভাষাটা নিয়ে রাজপথে আসতে হবে- এর কোনো বিকল্প নাই। কেউ আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে যাবে না, কেউ এই সরকারকে সরিয়ে দেবে না, যতক্ষন পর্য্ন্ত না জনগন সরিয়ে দিচ্ছে।

এ জন্য জনগণকে সংগঠিত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো শর্টকাট পদ্ধতি নেই। যখন একটা ফ্যাসিস্ট সরকার বুকের ওপর চেপে বসে তখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা খুবই কঠিন। এই কঠিন কাজটি জনগণকে নিয়ে আমাদের করতে হবে। আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কাজ করছি, চেষ্টা করছি। কোনো নির্দিষ্ট দল নয়, ব্যক্তি নয়, সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শক্তিকে সরাতে হবে। আন্দোলন বলুন, নির্বাচন বলুন, মানুষের অধিকার বলুন- সব কিছু জনগনের শক্তির মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করতে পারি।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --