November 27, 2019
কলারোয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশারের সেই ‘এবি পার্ক’ থেকে এবার জব্দ করা হলো ১০টি বন্যপ্রাণি
আলোরপরশ নিউজ   কলারোয়ার সেই ‘এবি পার্ক’ থেকে এবার উদ্ধার করা হলো অবৈধভাবে আটকে রাখা ১০টি বন্যপ্রাণি। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার যুগীখালী ইউনিয়নের ‘এবি পার্কে’ অভিযান চালিয়ে এগুলো উদ্ধার করেন ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযান পরিচালনাকালে পার্কের অভ্যন্তরে তৈরী করা ছোট আকৃতির ঘর থেকে ৩টি বানর, ২টি অজগর, ২টি গন্ধগকুল, ১টি গুই সাপ, ২টি বাঁজপাখি জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আক্তার হোসেন। এসময় সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো.মদিনুল আহসান, থানা পুলিশ, যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসানসহ সংশ্লিষ্টরা। পার্কটি স্থানীয়দের কাছে ‘জাহাজমারি পার্ক’ নামেও পরিচিত। খুলনা বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মদিনুল আহসান জানান, ‘যুগীখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার তার ব্যক্তি মালিকানাধীন এবি পার্কে বন্য প্রাণী আটক রেখে বিনোদন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। অবৈধভাবে বন্য প্রাণী আটক ও সংরক্ষণ দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে গ্রেপ্তার এড়াতে পার্কের মালিকসহ অন্যান্য কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। এবিষয়ে সাতক্ষীরা বন আদালতে পার্কের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট কলারোয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকতার হোসেন জানান, ‘অভিযান চলাকালে পার্কের অভ্যন্তরে তৈরী করা ছোট আকৃতির ঘর থেকে ৩টি বানর, ২টি অজগর, ২টি গন্ধগকুল, ১টি গুইসাপ, ২টি বাঁজপাখি  উদ্ধার করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি এই পার্ক থেকে ভ্রাম্যমাণ পতিতা ও খরিদ্দারসহ ৯জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ অভিযান চালিয়ে সেখানে ছোটছোট ঘরে অসামাজিক কর্মকান্ডের সময় হাতেনাতে তাদের আটক করে। ওই ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে।

——০————–

সাতক্ষীরার কলারোয়ার এবি পার্কে ৪ নারীসহ ৯ জন গ্রেফতার

অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে কলারোয়ায় এবি (আবুল বাশার) পার্ক থেকে চারজন নারী ও পাঁচজন পুরুষকে গ্রেফতার করেছে কলারোয়া থানা পুলিশ। শনিবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুনির উল গিয়াসের নির্দেশে কলারোয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজিবুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় চারজন ভাসমান যৌনকর্মী ও চারজন খদ্দেরকে হাতে নাতে ধরে ফেলে পুলিশ সদস্যরা। সে সময়ে ওই পার্কের মানেজার স্থানীয় কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে শহর আলী (৫০) কে অপকর্মের স্থান থেকে আটক করা হয়।

সে সময়ে ওই এবি পার্কের মালিক যুগিখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তবে, পার্কের মালিক আবুল বাশারসহ ১০ জনের নামে মানব পাচার প্রতিরোধ আইনের ১২(১)/১৩ ধারায় কলারোয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং আটককৃত ওই নয় আসামীকে ২৪ নভেম্বর জেলহাজতে পাঠিয়েছে কলারোয়া থানা পুলিশ।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ইন্সপেক্টর রাজিবুল হক জানান, দীর্ঘদিন এবি পার্কে অবৈধ ও অসামাজিক কর্মকান্ডসহ জুয়ার আসর বসতো এবং পার্কের ভিতরে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড চলাকালে বাইরে বা ভেতরে থাকা পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের চোখ ফাকি দিতে তাদেরকে পাহারা দিতে ব্যবহার করা হতো বাসারের নিজস্ব বাহিনী। গোপন সংবাদ পেয়ে ওই পার্কে অভিযান পরিচালনা করে সত্যতা পেয়েছি এবং চারজন নারীসহ নয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।

পুলিশের তথ্যমতে গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, কলারোয়া উপজেলা আলাইপুর গ্রামের মৃত ওমর আলির ছেলে শহর আলী (৫০), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শাহপাড়া দেবদুয়ার গ্রামের মৃত ফজর আলীর স্ত্রী কুলসুম বেগম (৫০), যশোরে ঝিকরগাছা উপজেলার বাকড়া আলিপুর গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৮), যশোরের কেশবপুর উপজেলার হান্নান মোড়লের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩০), একই উপজেলার গোপসেনা গ্রামের সুভাষ বিশ্বাসের ছেলে সূর্য বিশ্বাস (২৫), মনিরামপুর উপজেলার হায়াতপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৩), সাতক্ষীরা সদরের এল্লারচর গ্রামের মৃত ইমান আলীর মেয়ে আনজুয়ারা বেগম (৩৫), ঝিকরগাছা উপজেলার মৃত নাজের মোড়লের মেয়ে রেবেকা খাতুন (৩৫), শার্শা উপজোর লাওতাড়া গ্রামর আবদুল গফফারের ছেলে মাহফুজা খাতুন, কলারোয়া উপজেলার যুগিখালী গ্রামের মৃত এবাদ আলীর ফকিরের ছেলে আবুল বাশার (এ বি পার্কের মালিক)।

তিনি আরো জানান, ওই পার্কের মধ্যে ছোট ছোট অনেকগুলো অস্থায়ী ঘর আছে যার মধ্যে ঘন্টায় এক হাজার টাকা চুক্তিতে পার্কের মধ্যে অবস্থান করা ওই ভাসমান যৌনকর্মীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয় এবং সে সময়ে ওই ঘরের বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয় এবং সময় পার হলেই তালা খুলে দেয় পার্ক কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও পার্কের মধ্যে বিভিন্ন কৃত্রিমভাবে আড়াল করে রাখা আছে সেখানে প্রবেশ করলে পাঁচ’ত টাকা ভাড়া দিতে হয় পার্কে আগন্তুক স্কুল-কলেজে পড়ুয়া প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলদের।

যেখানে সব ধরনের অপকর্ম চলে। দূর থেকে দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে ওই আস্তানায় কোন মানুষ আছে। কলারোয়া উপজেলা সদর হতে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত গ্রাম ও চারিদিকে পানি বিলের মধ্যে জাহাজমারি নামক স্থানে বিগত ২০১৪ সালে এই পার্কটি ভ্রমণ পিপাসুদের বিনোদনের জন্য এই পার্কটি তৈরি করা হলেও মূলত অনৈক কর্মকান্ড চলে আসছে পার্কের মালিক আবুল বাশার ও ম্যানেজার শহর আলি।

কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকি জেলার বাইরে থেকেও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা এ বি পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপে নিজেদের নিয়োজিত রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করে। আর টাকার লোভে পার্কের মালিক আবুল বাশার ও ম্যানেজার শহর আলি স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে পার্কটিতে অনৈতিক কাজের কারখানার আখড়া হিসেবে ব্যবহার করছে দীর্ধদিন।

এদিকে, এলাকার সচেতন অভিভাকরা প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসনের চোখের সামনে কিভাবে এ বি পার্কে এসব অনৈতিক কাজ দিনের পর দিন চলে আসছে। বিভিন্ন সময় পার্কটিতে পুলিশ ও দোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সদস্যদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুনির উল গিয়াস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --