March 5, 2018
দুর্বল প্রতিবেশীদের সাথে কখনো সদাচরণ করেনি ভারত

সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ রাষ্ট্র ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীরা সবসময় বিগ ব্রাদার সুলভ আচরণের অভিযোগ করে আসছে। একমাত্র চীন ছাড়া সব প্রতিবেশীই ভারতের চেয়ে শুধু ভৌগোলিকভাবে ক্ষুদ্রই নয় বরং শক্তি-সামর্থেও অনেকটাই পিছিয়ে। গণচীন ও পাকিস্তান ছাড়া আর কোন প্রতিবেশীর সামরিক শক্তি ভারতের জন্য মোটেই হুমকী তো নয়ই বরং সমকক্ষও নয়।
তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শক্তিতে ভারত প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাই আঞ্চলিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার ভারতের জন্য যত সহজ অন্যদের ক্ষেত্রে ততটাই সঙ্গীন। যা ভারতকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিতে আবির্ভূত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সঙ্গতকারণেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এখন ক্ষমতার দ্বন্দ্বে অনেকটাই ভারসাম্যহীন। যা আঞ্চলিক শান্তি ও অগ্রগতির জন্য মোটেই সহায়ক নয়।
নিকট প্রতিবেশী পাকিস্তানকে ভারতকে জন্ম শত্রু মনে করা হয়। কারণ, ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে চরম বৈরিতার মাধ্যমেই ভারত বিভাজিত হয়েছিল এবং বিশ^মানচিত্রে পৃথক দু’টি জাতিসত্ত্বার উন্মেষ ঘটেছিল। তাই নিকট প্রতিবেশী দেশ দু’টির মধ্যে সম্পর্কটা কখনোই মধুর ছিল না। এমনকি ১৯৪৭ সালে উভয় দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বিভিন্ন ইস্যুতে দেশ দু’টি দফায় দফায় যুদ্ধে লিপ্ত হলেও ফলাফলটা একতরফাভাবে কারো পক্ষেই যায়নি বরং উভয় পক্ষকেই মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ দু’টোর মধ্যে বৈরিতার অবসান হয়নি। বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দু’দেশের সীমান্ত বরাবরই অস্থিরই থেকেছে। আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উভয় দেশের সৈন্যরা রণসজ্জায় সেই ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকেই। ফলে উভয় দেশের সৈন্য সহ সাধারণ মানুষকে সীমান্তে প্রতিনিয়ত প্রাণ দিতে হয়েছে এবং এখনও হ্েচছ। কিন্তু বৈরিতার কোন অবসান হচ্ছে না বরং উভয় দেশের সীমান্ত ক্রমেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। আর এর শেষ কোথায় তা বলা রীতিমত কষ্টসাধ্য।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের অনেক চেষ্টা করা  হলেও কাশ্মীর ইস্যুর কোন গ্রহণযোগ্য সমাধান না হওয়ায় সে শান্তি কেবল কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি। .মনে করা হয় যে, ভারতে একগুঁয়েমীর কারণেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়নি। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযারি ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর  উপত্যকতায় গণভোটকেই মনে করা হয় সমাধানের অদ্বিতীয় ও গ্রহণযোগ্য পন্থা।
কিন্তু ভারত প্রথম দিকে এ প্রস্তাবে রাজী থাকলেও তারা সে অবস্থান থেকে বেশ আগেই সরে এসেছে। তারা এখন জন্মু-কাশ্মীরের অবিচ্ছেদ্য অংশই মনে করছে। ফলে সমস্যা যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে। তাই উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের স্বপ্নটা দুঃস্বপ্নেই পরিণত হয়েছে। এমনকি সহসাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের  কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বরং ক্রমেই তার অবনতি হচ্ছে।
ভারতে বিরুদ্ধে বরাবরই একটা অভিযোগ প্রবল যে, দেশটি ক্ষুদ্র তথা দুর্বল প্রতিবেশীর সাথে কখনোই সদাচরণ করেনি বরং সব সময়ই দাদাগিরি করে এসেছে। আর দুর্বল প্রতিবেশীরা একান্ত অনিচ্ছাস্বত্বেও আনুগত্য করে এসেছে এই বৃহৎ প্রতিবেশীর। কিন্তু দেশটি কোন প্রতিবেশীর প্রতি ন্যুনতম সৌজন্যও প্রদর্শন করেনি বলেও অভিযোগ আছে। এমনকি নিকট প্রতিবেশীদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই প্রতিবেশীর হস্তক্ষেপের বিষয়টিও সমসাময়িক রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যা ভারতকে অনেকটা বেকফুটে ফেলে দিয়েছে। ফলে দক্ষিণ-এশীয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব ক্রমহ্রাসমান বলেই মনে করা হয়েছে। আর সে ধারাবাহিকতায় ভারতের নিকট প্রতিবেশী নেপাল বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং সে অবস্থানের পক্ষে দেশটিতে জাতীয় ঐক্যও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এমনকি কাশ্মীরের উড়ি সেনা ছাউনী সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত সার্ক সম্মেলন বর্জন করলেও ভারতের সিদ্ধান্তকে ক্ষুদ্র প্রতিবেশী নেপাল খুব একটা পাত্তা দেয়নি বরং তারা সার্ক সম্মেলনের  পক্ষেই কথা বলেছিল। সার্কভূক্ত দেশ শ্রীলঙ্কার ওপর ভারতের প্রভাব আগের মত নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ঢোকালাম ইস্যুতে অতিক্ষুদ্র প্রতিবেশী ভুটানের অবস্থানও পুরোপুরি ভারতের পক্ষে যায়নি বরং এ ইস্যুতে চীনের পাল্টাটায় বেশ ভারী বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। মূলত ভারতে অতিমাত্রায় প্রভূসুলভ আচরণের কারণেই দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে দেশটির প্রভাব ভাটির টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এ ধারা অব্যাহত থাকলে তা ভারতের জন্য মোটেই সুখকর হবে না বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বোদ্ধামহল।
আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব কমতে শুরু করায় বৈশ্বিক রাজনীতিতেও নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকি ভারতে এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়াও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে বলেই দৃশ্যত সুষ্পস্ট। বিভিন্ন ইস্যুতে দেশটি রাশিয়াকে কোন ভাবেই কাছে পাচ্ছে না বরং সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার অবস্থান ভারতের প্রতিপক্ষকেই সহায়তা করছে। শুধু তাই নয়, ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসপ্রবণ রাষ্ট্র হিসাবে গ্রে তালিকায় রাখা অবশেষে সম্ভব হলেও পাকিস্তানকে যেভাবে চীন, সৌদি আরব আর তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়াও বাঁচানোর চেষ্টা করছে তা ভারতের পক্ষে মোটেই সুখকর হয়নি বরং দেশটিকে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। সৌদি আরব, তুরস্ক আর চীন সরাসরি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়ার প্রস্তাবকে প্রাথমিক বিরোধিতা করলেও রাশিয়াও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে আগাগোড়া। এটাই ভারতের জন্য একটি বৃহত্তর আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। যা বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারতের গুরুত্ব কমার দিকেই অঙ্গলী নির্দেশ করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে উপমহাদেশ ও পশ্চিম এশিয়ায় একটি বিশেষ অক্ষশক্তির কাঠামো তৈরি হচ্ছে। চীন যার ভরকেন্দ্র। চীন ও রাশিয়া উভয়ের সামরিক সহায়তা ও সৌদি আরবের আর্থিক সাহায্য যদি পাকিস্তানের  পেছনে থাকে তাহলে কৃটনৈতিক সমীকরণের একটি নতুন পর্ব শুরু হবে। যা ভারতকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করবে। এমন আশঙ্কায় দেশটিকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফিরছে। কিন্তু সে অবস্থা থেকে উত্তরণের সহজ কোন পথ বের করতে পারছে না। তাই ভারত আগামী দিনের কুটনীতিকে সমস্যসঙ্কুলই মনে করছে। কারণ, পরিস্থিতি এত দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে যা ভারতের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সহজসাধ্য হবে বলে মনে হয় না।
মূলত বিগত ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়া সামরিক বাহিনীর যৌথ মহড়া করেই বুঝিয়ে দিয়েছে মস্কোর অভিমুখ বদলাচ্ছে। এরপর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়ার আচরণ ভারতের প্রতি পক্ষপাতযুক্ত ছিল না। যে অবস্থানটি আগে ছিল অত্যন্ত প্রকট। এর আগে যে কোনো ভারতমুখী প্রস্তাব অথবা ভারতের কোনো অবস্থানকে সর্বাগ্রে সমর্থন দিয়েছে রাশিয়া। ভারত যতই বিগত বছরগুলোকে অনেক আগ্রাসীভাবে আমেরিকা ও ইসরাইলের দিকে সরে গেছে এবং সম্পর্ক অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে, ততই রাশিয়ার মনোভাব হয়েছে শীতল।
আর সে অবস্থা এখনও অব্যাহত আছে।  তার নবতম প্রতিফলন দেখা গেল পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয়দাতা রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে মূলত আমেরিকা ও অন্য পশ্চিমী দেশগুলোর উদ্যোগকে যেভাবে প্রাথমিকভাবে ভন্ডুল করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। যা ভারতের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক ছিল না।
চীন ও সৌদি আরবের এই যুগলবন্দীর আর একটি উদাহরণ সাম্প্রতিক মালদ্বীপ ক্রাইসিস। বিগত বছরগুলিতে মালদ্বীপে নতুন সরকারের আগমনের পর থেকে চীন আর সৌদি আরবের লগ্নি এবং ওই দ্বীপপূঞ্জের প্রশাসনে হস্তক্ষেপ অনেক বেশি আগ্রাসী হয়েছে। সম্প্রতি মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরই দেশে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে মালদ্বীপ সবার আগে দুটি দেশে নিজেদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। চীন ও সৌদি আরবে। এবং প্রথমেই ভারতে পাঠানো হয়নি দূত। উল্টা ভারতীয় সাংবাদিক ও নাগরিক কয়েকজনকে ভারতে জোর করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তারপর মালদ্বীপ চেয়েছিল ভারতে দূত পাঠাতে। তখন আবার ভারত সেটি কৌশলে প্রত্যাখ্যান করে। তবে সৌদি আরব যেভাবে প্রকাশ্যে ও প্রকটভাবে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে তারপর উদ্বেগ আরো বেড়েছে। যদিও পাকিস্তান সৌদির পুরানো বন্ধু। পাকিস্তানের এক হাজার সেনা সৌদি আরবের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আর তারপর আরো ১৫০০ সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তান। অথচ সৌদি আরব ভারতের সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী একঝাঁক চুক্তি সম্পাদন করে আশ্বাস দিয়েছিল সন্ত্রাসের লড়াইতে তারা ভারতের পাশে থাকবে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না বরং বিপরীতমুখী অবস্থাটা ক্রমেই সুষ্পষ্ট হয়ে উঠছে। তাই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভারত তার আধিপত্যবাদী মনোভাবের কারণেই ক্রমেই বন্ধুহীন ও এক ঘরে হয়ে পড়ছে। যা দেশটির জন্য মোটেই শুভ ইঙ্গিত বহন করে না।
বিগত দিনগুলোতে মার্কিন-ভারত সম্পর্কটা বেশ জোরদার হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে চীন ইস্যুতে দেশ দু’টির সম্পর্ক অতীতের সকল সময়ের চেয়ে ভাল বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সাথেও ভারতের সম্পর্কটা খুব একটা ভাল যাচ্ছে বলে মনে হয় না। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে একই বিষয়ে এই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল তাকে। ট্রাম্প বলেন, নরেন্দ্র মোদি খুবই ভাল মানুষ, কিন্তু তাতে আমেরিকার কোনও লাভ হচ্ছে না।
প্রধানত হার্লে ডেভিডসন মোটরবাইকের উপর ভারত সরকারের ‘চড়া আমদানির শুল্কে’র কারণেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এদিন নরেন্দ্র মোদির শরীরি ভাষা অনুকরণ করে (যেভাবে মোদি হাত জোড় করে ‘নমস্তে’ বলেন) ট্রাম্প বলেন, “আমি যখন এ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলি, তিনি বলেন শুল্কের হার কমিয়ে ৫০% করে দেওয়া হবে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেসব কিছুই হল না। তিনি সম্ভবত মনে করছেন যে এতে আমাদের অনুগ্রহ করা হবে। কিন্তু আদতে তা নয়।”
ট্রাম্পের কথা অনুযায়ী মোদি তাকে বলেছিলেন, আগের আমলে আমদানি শুল্ক ৭৫ শতাংশেরও বেশি ছিল। কিন্তু মোদী সরকারই তা কমিয়ে ৭৫ শতাংশ করেছে। এটাকেও কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে বলে নাকি কথা দিয়েছিলেন মোদী। মোদীর এই প্রতিশ্রুতিকেই এদিন বিধেঁছেন ট্রাম্প। বিদ্রুপ করে তিনি বলেন, “কি বলি বলুন তো! আমার কি এই কথা শুনে রোমাঞ্চিত হওয়া উচিত!”
প্রসঙ্গত, নিজের নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’-এর কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে যে তিনি কোনও রকম আপস করবেন না সেই বার্তাও বহুবার এসেছে ওভাল অফিস থেকে। পাশাপাশি, ভারতের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বার্তাকে নরমে-গরমে চলার নীতি বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। ফলে সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি যে এখন ভারতের অনকুলে নয় সে কথা জোর দিয়েই বলা যায়। মূলত ভারসাম্যহীন পররাষ্ট্রনীতির কারণেই দেশটির এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে করছেন বোদ্ধামহল।
বিশ্বপরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বিশেষ করে শীতল যুদ্ধোত্তর সময়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একচ্ছত্র মোড়লীপনায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। বিশ্বের ক্ষুদ্র জাতিস্বত্ত্বা নিজেদের সকীয়তা ও অস্তিত্ব রক্ষায় আত্মসচেতন হতে শুরু করেছে। ফলে বৈশ্বিক রাজনীতিতে বৃহত শক্তিগুলোর প্রভাব-প্রতিপত্তিতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। আর ধারাবাহিকতা এসে আছড়ে পড়েছে ভারতীয় প্রভাব-প্রতিপত্তিতে।
ক্ষুদ্র প্রতিবেশীগুলোও  এখনও ভারতের খুব একটা অনুগত নয়। বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নকেও ভারত খুব ভাল চোখে দেখছে। যদিও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভারতের জন্য মোটেই উদ্বেগজনক নয়। কিন্তু এতেও ভারত আশ্বস্ত হতে পারছে না। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আঞ্চলিক ও বৈশি^ক রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব যে নিম্নমুখী তা মোটামোটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।
smmjoy@gmail.com

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --