September 15, 2019
সত্যের সন্ধানে গৃহত্যাগী’ সাতক্ষীরার স্কুল ছাত্র মোহায়মিনুল চট্টগ্রামে উদ্ধার

আলোর পরশ নিউজ : সাতক্ষীরায় সত্যের সন্ধানে গৃহত্যাগী মেধাবী স্কুল ছাত্র মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিনকে চট্টগ্রামে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে চট্রগ্রাম বন্দর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে মোহায়মিনুলের বাবা সদর থানার পুলিশ কন্সটেবল সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান এ কথা জানান।
মোহায়মিনুল ইসলাম মমিন (১৪) সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কন্সটেবল সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার গভীর রাতে তার কাছে তার ছেলেকে উদ্ধারের খবর আসে। তার নিখোঁজ ছেলেকে গ্রহণ করতে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তার ব্যাংকার ছেলে আবদুল আহাদ। আহাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও জানান, মোহায়মিনুল সুস্থ্য রয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর থানার এএসআই মাহমুদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টীম তাকে গ্রহন করার জন্য রবিবার সকালে চট্টগ্রাম রওনা হয়েছে। এই টীমে বাবা পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান নিজেও রয়েছেন। তবে কোথায় কিভাবে তার ছেলেকে উদ্ধার করা গেছে সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু জানতে পারেন নি। এর নেপথ্য রহস্য কী সে সম্পর্কেও তিনি কিছুই জানতে পারেন নি। তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে ন¤্র ভদ্র স্বভাবের। সে কোনো চক্রের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। তাকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত এর চেয়ে আর কিছু এই মুহুর্ত্বে বলা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গতঃ ‘আমি গৃহ পলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে’। ‘কেহ জিজ্ঞাসা করিলে গৃহ পলায়ন বলো না , বলো গৃহত্যাগ’। এমন সব কথা চিরকূটে লিখে শুক্রবার রাতে এশার নামাজ পড়ার কথা বলে শহরের মুনজিতপুরের ভাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে স্থানীয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন। নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে মোহায়মিনুল ইসলাম (১৪) আরও লিখেছে ‘দীর্ঘকালে আমাকে কেহ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভুর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত: মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি’।
মোহায়মিনুলের বড় ভাই আবদুল আহাদ জানান, তার কোনো বন্ধু নেই। দুই একটি ছেলের সাথে সে স্কুলে যেতো। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবতো। কথা বলতো এবং কবিতা লিখতো। গোপালগঞ্জ সদরে তাদের বাড়ি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্লাসে তার রোল ১। সে আধ্যাত্মিক ভাষায় একটি চিঠি লিখে গেছে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে (নম্বর ৮৯৯) ।
সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সরকার জানান, শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পরই মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান জানান তার ছেলের গৃহত্যাগের কথা। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রধান শিক্ষক জানান ছেলেটি অত্যন্ত বিনয়ী ন¤্র ও ভদ্র স্বভাবের । তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তার লেখাপড়া আচরন শৃংখলা সবদিকই ছিল প্রশংসনীয়। তবে গৃহত্যাগের কারণ কি তা তিনি বলতে পারেন নি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শনিবার মধ্যরাতে চট্রগ্রামের বন্দর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সাতক্ষীরায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। কি কারনে বা কাদের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে সেখানে গিয়েছিল সেসব বিষয়ে এখনো জানা যায়নি। জিজ্ঞাসবাদ শেষে বিস্তরিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ বলেন, ছেলেটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত বলবো।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --