March 3, 2019
ভারতীয় হামলায় হতাহতের কোন প্রমাণ পায়নি আল জাজিরা

আলোরপরশ নিউঃ  ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে কোনো চাপের মুখে ছাড়া হয়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। বিবিসি উর্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এ কথা বলেন। নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করতে বিমান হামলা চালাতে গিয়ে পাকিস্তানে আটক হওয়া ভারতীয় পাইলটকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ইসলামাবাদের সিদ্ধান্ত সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে জানাতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এজন্য তিন দফায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তবে একবারের জন্যও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কেউ এ ফোন রিসিভ করেনি। এদিকে কাশ্মীরের পুলওমায় জঙ্গি হামলায় নিহত জওয়ানদের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। জঙ্গিদের লক্ষ্য করে চালানো অভিযানে ৩০০-৩৫০ জন জঙ্গি নিহতের দাবি করা হয় ভারতের পক্ষ থেকে।  তবে ভারতের দাবি করা বিমান হামলা আসলে বালাকোটে নয় বরং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জাব্বা এলাকায় হয়েছে। সেখানে কোনো হতাহতের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে আল জাজিরা জানায়। -বিবিসি, ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, আউটলুক ইন্ডিয়া, আল জাজিরা, রয়টার্স।
ভারতীয় পাইলটকে চাপের মুখে ছাড়া হয়নি- কুরেশি : ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে কোনো চাপের মুখে ছাড়া হয়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। বিবিসি উর্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এ কথা বলেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলা ও ভারতীয় পাইলটের মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট উত্তেজনা কমাতে পাকিস্তানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব চাপ দিয়ে আসছিল। তবে এই চাপের কথা সরাসরি নাকচ করে দেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ ছিল না। কোনো বাধ্যবাধকতাও ছিল না।’
সাক্ষাৎকারে কুরেশি বলেন, ‘আমরা তাদের (ভারত) জানাতে চাই, আমরা আপনাদের দুঃখ বাড়াতে চাই না। আমরা ভারতীয়দের দুর্দশা চাই না। আমরা শান্তি চাই।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান অতীতে ফিরতে চায় না। কিন্তু যদি ফিরতে হয়, তাহলে আমাদের দেখতে হবে কেমন করে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে হামলা, পাঠানকোট ও উরিতে হামলা হয়েছে। আর সে এক দীর্ঘ ইতিহাস।’ এর আগে কুরেশি পাকিস্তানের জিয়ো নিউজকে বলেন, দেশ বা আঞ্চলিক শান্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে এমন রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কিছু পাকিস্তান মেনে নেবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।’
কুরেশি বলেন, জইশ-ই-মুহাম্মদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। গতকাল শুক্রবার তিনি বলেছেন, জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার পাকিস্তানে আছেন।
পাকিস্তানে হামলায় হতাহতের প্রমাণ পায়নি আলজাজিরা : কাশ্মীরের পুলওমায় জঙ্গি হামলায় নিহত জওয়ানদের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। জঙ্গিদের লক্ষ্য করে চালানো অভিযানে ৩০০-৩৫০ জন জঙ্গি নিহতের দাবি করা হয় ভারতের পক্ষ থেকে।  তবে ভারতের দাবি করা বিমান হামলা আসলে বালাকোটে নয় বরং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জাব্বা এলাকায় হয়েছে। তবে সেখানে কোনো হতাহতের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও হামলাস্থলের কাছাকাছি জইশ-ই মুহাম্মদ পরিচালিত একটি মাদ্রাসা রয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্যই জানিয়েছে আল জাজিরার সাংবাদিকরা। কাতার ভিত্তির সংবাদমধ্যমটি জানায়, গত বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। হামলার পর দেশটি দাবি করে, পাকিস্তানের বালাকোটে তাদের বিমান হামলায় জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই মুহাম্মদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। হামলার কথা স্বীকার করলেও এতে কেউ নিহত হননি বলে দাবি করে পাকিস্তান। এছাড়া ওই অঞ্চলে জইশ-ই মুহাম্মদের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই বলেও দাবি করে দেশটি।
এরপর সেখানে যান আল জাজিরার সংবাদকর্মীরা। তারা জানান, হামলাস্থল তারা দেখেছেন। স্থানটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন খাওয়া প্রদেশের জাব্বা এলাকায়। এটি রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে। সেখানে তারা চারটি বোমা বিস্ফোরণের প্রমাণ পেয়েছেন। এরমধ্যে তিনটি বোমা পড়েছে বনের মধ্যে এবং একটি বোমা পড়েছে কৃষিক্ষেতে। এতে বেশ কিছু পাইন গাছ ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া কিছু গাছে বোমার স্পিøন্টার গেঁথে থাকতে দেখেছেন তারা। এছাড়া সৃষ্টি হওয়া চারটি গর্তের আশপাশে বোমার ধ্বংসাবশেষও দেখেছেন তারা। এতে কেউ নিহত হননি বলে স্থানীয়রা আল জাজিরার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
৩ বারেও ইমরানের ফোনে সাড়া দিলেন না মোদি : নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করতে বিমান হামলা চালাতে গিয়ে পাকিস্তানে আটক হওয়া ভারতীয় পাইলটকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ইসলামাবাদের সিদ্ধান্ত সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে জানাতে চেয়েছিলেন ইমরান খান। এজন্য তিন দফায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তবে একবারের জন্যও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কেউ এ ফোন রিসিভ করেনি।
মোদিকে দফায় দফায় ফোন করেও কোনও সাড়া না পেয়ে পরে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে ভারতীয় পাইলটের মুক্তির ঘোষণা দেন ইমরান খান। শান্তির বার্তা দিতেই ইসলামাবাদ এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি। -এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ডন, আউটলুক ইন্ডিয়া
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তেজনা কোনও দেশেরই প্রত্যাশিত বিষয় নয়। ভারত, পাকিস্তানের জন্যও নয়। এজন্য তিনি নিজেই বৃহস্পতিবার মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। তবে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
উত্তেজনা কমাতে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে দুর্বলতা হিসেবে না ভাবতেও ভারতের প্রতি আহ্বান জানান ইমরান খান। তার ভাষায়, ‘একে ভুল বার্তা হিসেবে নেওয়া ঠিক হবে না।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো অবশ্য বলছে, শান্তির বার্তা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের চাপের মুখেই আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান।
এদিকে আটক ভারতীয় পাইলটকে তাড়াহুড়ো করে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। দলটি জানতে চেয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সরকার পর্দার অন্তরালে কোনও সমঝোতায় গেছে কি-না? শুক্রবার পাকিস্তানের সিনেটে এ নিয়ে আলোচনায় এসব প্রশ্ন তোলেন পিপিপি’র পার্লামেন্টারি বোর্ডের নেতা শেরি রেহমান।
তিনি বলেন, পিপিপি ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেওয়ার বিরোধী নয়। কিন্তু এর বিনিময়ে পাকিস্তান ভারতের কাছে কি চেয়েছে? সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, এর বিনিময়ে ভারত কোনও ছাড় দেয়নি। এটি সত্য হলে তা হবে একটি অপরিপক্ব কূটনীতি। ভারত দুই দফায় পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এটা এক ধরনের আগ্রাসন। শেরি রেহমান বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বার বার ফোন স্বত্ত্বেও তাতে সাড়া দেননি মোদি। দিল্লির উচিত ছিল, প্রধানমন্ত্রীর ফোনের অন্তত জবাব দেয়া।
‘ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার পরই মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র’ : ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান গুলী করে ভূপাতিত করার পরেই দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণুশক্তিধর দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত সমাধানের এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের সাবেক এক কর্মকর্তা এমন তথ্য দিয়েছেন।-খবর ডন অনলাইনের।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলের হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের আফগানিস্তান ও পাকিস্তান বিষয়ক সাবেক পরিচালক শামিলা এন. চৌধুরী বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি বিমান গুলী করে যখন পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে, তখনই ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার আছে বলে যে ভাষ্য দিয়েছিল, তা থেকে সরে এসেছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের খবরের পত্রিকা দ্য হিলে তিনি লিখেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ভারত-পাকিস্তানকে সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং যেকোনো উত্তেজনা কমিয়ে আনতে বলেছেন।
পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েক জন আইনপ্রণেতা পম্পেওর বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এলিওট এল. এনজেল বলেন, উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে ভারতে ফেরত পাঠানো সংঘাতের অবসানে অর্থপূর্ণ সংলাপের পথে এগিয়ে যাওয়ার ভালো উদ্যোগ।
এর আগে পাকিস্তান থেকে ভারতে আসার আগে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম সবসময় অতিরিক্ত রঙ মেখে খবর প্রচার করে। তারা তুচ্ছ বিয়ষকেও মারাত্মক হিংসাত্মকভাবে বর্ণনা করে। এভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
৩৫ বছর বয়সী এই ভারতীয় পাইলট বলেন, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী খুবই পেশাদার। তাদের মধ্যে আমি শান্তি দেখেছি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি। তারা আমাকে অভিভূত করেছে। ভারতীয় এই পাইলট বলেন, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পাকিস্তানী সেনারা আমাকে রক্ষা করেছেন।
‘পাকিস্তানী সেনারাই আমাকে রক্ষা করে’ : পাকিস্তানে বন্দী হওয়ার পর দেশে ফেরা ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করা এই ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ধরা পড়ার পর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পাকিস্তানী সেনারাই তাঁকে রক্ষা করেছিলেন।
অভিনন্দন বলেন, ‘সেখানে অনেক লোক ছিল। আমার বাঁচার একটিই উপায় ছিল, তা হলো পিস্তল ফেলে দৌড় দেওয়া। আমি সেটাই করি। কিন্তু লোকজন তখন আমার পিছু নেয়। তারা খুব বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। ঠিক তারপরই দুই পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তা সেখানে হাজির হন এবং আমাকে রক্ষা করেন। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর এই ক্যাপ্টেনরা আমাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচান। তাঁরা আমার কোনো ক্ষতি হতে দেননি। পরে তাঁরা তাঁদের ইউনিটে নিয়ে আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর সেখান থেকে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষানিরীক্ষা করে আরও চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী খুবই পেশাদার এ মন্তব্য করে ভারতীয় পাইলট আরও বলেন, পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি এবং আমি খুব অভিভূত।’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম সব সময় সত্যকে এদিক সেদিক করে প্রকাশ করে। খুব সামান্য বিষয়কেও তারা এমন উসকানিমূলকভাবে উপস্থাপন করে যে মানুষ বিভ্রান্ত হয়।’
জঙ্গলে বোমা ফেলে ‘গাছ হত্যা’, জাতিসংঘে ভারতের বিচার চাইবে পাকিস্তান : নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে কাশ্মীরের পাকিস্তান সীমান্তের জঙ্গলে বোমা ফেলে ‘গাছ হত্যা’র ঘটনায় জাতিসংঘে ভারতের বিচার চাইবে পাকিস্তান। গাছের ওপর ভারতের এই বিমান হামলাকে ‘পরিবেশ সন্ত্রাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা। — আল জাজিরা, রয়টার্স
২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে কাশ্মীরের পাকিস্তান অংশে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। হামলায় অন্তত ৩০০ জঙ্গি নিহতের দাবি করলেও এর পক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয় দিল্লি। তবে আল জাজিরা ও রয়টার্সের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওই হামলায় কোনও মানুষ নিহত না হলেও বোমার তীব্রতা ছিল ভয়ানক। এতে ১৫টি পাইন গাছ উপড়ে গেছে। বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট চারটি গর্তও নজরে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর। এমন পরিস্থিতিতেই শুক্রবার ভারতের বিরুদ্ধে ‘গাছ হত্যা’র বিচার চেয়ে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হওয়ার ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মালিক আমিন আসলাম বলেছেন, ভারতীয় যুদ্ধবিমান থেকে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। এর ফলে সেখানে পরিবেশের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার খতিয়ান তৈরি করছে ইসলামাবাদ।
মালিক আমিন আসলাম বলেন, কাশ্মীরের জঙ্গলে ভারত যা করেছে এটি হচ্ছে পরিবেশ সন্ত্রাসবাদ। বহু পাইন গাছের মৃত্যু হয়েছে। এটি পরিবেশের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। জাতিসংঘসহ অন্যান্য ফোরামে ভারতের ‘গাছ হত্যা’ তথা পরিবেশের ওপর হামলার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, দিল্লি যুদ্ধবিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করে জঙ্গলের ভেতরে বহু গাছ হত্যা করেছে। এভাবে নির্বিচারে গাছ হত্যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লঙ্ঘন।
ভারতের অস্ত্রের বড় উৎস ইসরাইল : ভারত ও পাকিস্তান যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইসরাইলি অস্ত্র। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক মূল অংশীদার হয়ে উঠেছে ইসরাইল। ভারতে সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রাগারকে আধুনিক কর্মসূচির অধীনে এনে তাকে আরো আধুনিকায়ন করার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রযুক্তিগত ভূমিকা রাখছে ইসরাইল। এ খবর দিয়েছে ইসরাইলের পত্রিকা জেরুজালেম পোস্ট অনলাইন।
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুত। তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০০ কোটি ডলারে। ভারতের অস্ত্রবাজারে ইসরাইলের বিভিন্ন পর্যায়ের বড় বড় অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সুযোগ খুঁজেছে। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ইসরাইল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই), রাফায়েল এডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস, ইসরাইল মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএমআই) এবং এলবিট।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --