September 28, 2018
বাংলাদেশকে ভয় পাচ্ছেন ধাওয়ান!

 আলোরপরশ নিউজঃ

এশিয়া কাপ ক্রিকেটে সুপার ফোরে সহজে হারালেও ফাইনালে বাংলাদেশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত। তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল ভারতীয় দলের ওপেনার শিখর ধাওয়ানের কথায়। তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তান কাগজে কলমে শক্তিশালী দল হলেও, বাংলাদেশ কিন্তু মাঠে নেমে সেরাটা মেলে ধরেছে। ওদের হারানো সব সময় কঠিন। বড় দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ভালো পারফর্ম করে। তবে আমরা গোটা টুর্নামেন্টে যেভাবে খেলেছি, ফাইনালে সেটা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। খেতাব জেতার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’

এশিয়া কাপে বিরাট কোহলিকে বিশ্রাম দিয়েছে বিসিসিআই। তাই সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। ধাওয়ান বলেছেন, ‘প্রচণ্ড গরমে একের পর এক ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। তাই আমরা কয়েকজন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলিনি। ফাইনালের আগে এই বিশ্রাম দরকার ছিল।’ ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে ধাওয়ানের এ বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।

এশিয়া সেরার লড়াইয়ে মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ
অনেকেই ভেবেছিলেন, এশিয়া কাপের ফাইনালে ফের মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। কিন্তু সব হিসাব উলটে দিয়েছে বাংলাদেশ। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে মাশরাফি মর্তুজারা পাকিস্তানকে উড়িয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন।
এশিয়া সেরা কে হবে সেটা সময় বলবে। তবে বিগত কয়েক বছরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উত্থান চোখে পড়েছে। শেষ তিনটি এশিয়া কাপের ফাইনালের দু’টিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। দু’বারই তাদের রানার্স হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। অতীতের ভুল শুধরে এশিয়া কাপ জেতার আরো একটা সুবর্ণ সুযোগ বেঙ্গল টাইগার্সদের সামনে।

ছ’বারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত যে এবারও খেতাব জয়ের অন্যতম ফেবারিট সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এবারের টুর্নামেন্টে ভারত এখনও অবধি অপরাজিত। গত ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সারির দল নামিয়ে কোনোরকমে হার এড়িয়েছিলেন ধোনিরা। ম্যাচটি টাই হয়েছিল। তবে পুরো শক্তির ‘টিম ইন্ডিয়া’কে হারানো মোটেই সহজ হবে না বাংলাদেশের পক্ষে।

এশিয়া কাপে বিরাট কোহলির অভাব বুঝতেই দেননি রহিত শর্মা। দারুণ নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও সফল রহিত। নিয়মিত রান করছেন। বাংলাদেশ বিরুদ্ধে ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছিলেন। রহিত যদি শুরুটা ঠিকমতো করতে পারেন, তাহলে বড় ইনিংস থেকে তাকে বিরত রাখতে সমস্যায় পড়বেন বাংলাদেশের বোলাররা।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতার পর বেশ চাপে ছিলেন শিখর ধাওয়ান। এশিয়া কাপ ছিল তাঁর কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই বাধা তিনি অনেকটাই অতিক্রম করতে পেরেছেন। জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এশিয়া কাপে। হংকংয়ের বিরুদ্ধে করেছিলেন ১২৭ রান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঝকঝকে ১১৪ রানের ইনিংসটা ছিল আরও বেশি আক্রমণাত্মক। ফাইনালেও নিজের সেরাটা নিশ্চয়ই মেলে ধরার চেষ্টা করবেন ধাওয়ান।

তিন নম্বরে অম্বাতি রায়াডু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছেন। চার নম্বরে দীনেশ কার্তিক দলকে নির্ভরতা জোগানোর চেষ্টা করছেন। তবে যাবতীয় চিন্তা মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে। ইংল্যান্ড সফর থেকে মাহির ব্যাটে রান নেই। এশিয়া কাপেও ধোনি-ধামাকা থেকে এখনও বঞ্চিত তাঁর ভক্তরা। ধোনি নিজেও বড় রানের প্রতীক্ষায় প্রহর গুণছেন। কে জানে, ফাইনালকেই হয়তো শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ হিসাবে বেছে নেবেন মাহি। তবে লোকেশ রাহুল আফগানিস্তান ম্যাচে ভালো ব্যাট করেছিলেন। তবুও তার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা কম। কেদার যাদবকে স্পিন অলরাউন্ডার হিসাবে কাজে লাগানো হতে পারে। অলরাউন্ডার হিসাবে খেলতে পারেন রবীন্দ্র জাদেজা।

দুবাইয়ে এখন প্রচণ্ড গরম। ক্রিকেটাররা যেমন খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, তেমনি উইকেটও মন্থর হচ্ছে দ্রুত। সেক্ষেত্রে টস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশের পেস আক্রমণ বেশ শক্তিশালী। অভিজ্ঞ মাশরাফি মর্তুজার পাশাপাশি কাটার স্পেশালিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান কিন্তু প্রতিটি মুহূর্তে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতো তারকাদের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হেলায় হারিয়ে মনোবল অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।

ভারত হয়তো দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালকে নিয়ে মাঠে নামবে। দুই স্পেশালিস্ট পেসার হিসাবে খেলতে পারেন ভুবনেশ্বর কুমার ও যশপ্রীত বুমরাহ। এশিয়া কাপে তাদের যুগলবন্দি দারুণ জমে উঠেছে। তবে ভারতীয় বোলারদের একটা কথা মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশের ব্যাটিং মোটেই দুর্বল নয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১২ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ ২৩৯ রান তুলেছিল। দারুণ ছন্দে আছেন মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক রানের জন্য তিনি সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন। লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মমিনুল হকরা টপ অর্ডারে বাংলাদেশের বড় ভরসা। মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহরা কঠিন সময় দলের হাল ধরতে পারেন।

দুই দলের ব্যাটিং ও বোলিংয়ে যথেষ্ট বৈচিত্র রয়েছে। বাইশ গজে দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিগত কয়েক বছরে অন্য মাত্রা নিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, শুক্রবার এক উপভোগ্য ফাইনাল হবে।

More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --