March 24, 2018
সিকান্দার আবু জাফর ছিলেন সমকাল সাহিত্য গোষ্ঠি আন্দোলনের বর্গীয় প্রাণ পুরুষ: আব্দুস সামাদ
 সিকান্দার আবু জাফর ছিলেন সমকাল সাহিত্য গোষ্ঠি আন্দোলনের বর্গীয় প্রাণ পুরুষ। তিনি নিজে শুধু কবিতা লেখেননি, তিনি বহু কবির জন্ম দিয়েছেন এবং বহু কবি সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সমকাল সাহিত্য আন্দোলন ছিল অসাধারণ প্রদিপ্ত আন্দোলন। যার সৃষ্টি হচ্ছে বহু কবি-সাহিত্যিক। কবিতার শক্তি অসাধারণ। কবিতার জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কবিদের কবিতা আমাদের মুক্তি যোদ্ধাদের অনুপ্রানিত করেছিল। কবিতার জন্যই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ ফারুক।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় সাতক্ষীরার তালার তেঁতুলিয়ায় কবি সিকান্দার আবু জাফরের জন্মভিটায় ১৫ দিন ব্যাপী ‘কবি সিকান্দার মেলা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বলা হয় রাজনীতির কবি। রবীন্দ্র্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামকে তিঁনি ব্যাপক ভালবাসতেন। একজনের গানকে তিঁনি রসংগীত ও আর একজনের গানকে তিনি জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তার বক্তৃতায় রবীনদ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের কথা ফুটে উঠেছে। এমনকি জয় বাংলা শব্দটাও তিনি নজরুল ইসলামের কাছ থেকে নিয়েছেন। আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে আমাদের গান, কবিতা ব্যাপক অবদান রেখেছে।
তিনি বলেন, কবিতা, সাহিত্য মানুষকে প্রদিপ্ত করার জন্য, মানুষকে সংস্কৃতিবান করার জন্য, মানুষকে মানবিক করার জন্য। কাজেই রবীন্দ্রনাথের যদি জন্ম না হতো, নজরুলের যদি জন্ম না হতো, জীবনান্দ, জসীমউদ্দীনের যদি জন্ম না হতো, সিকান্দার আবু জাফর, শামসুর রহমানের যদি জন্ম না হতো তাহলে আমাদের চিন্তার জগৎ, আমাদের মানবিকতার জগৎ, আমাদের ভালবাসার জগৎ, আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার জগৎ, জঙ্গিবাদ বিরোধিতার জগৎ কখনও প্রসারিত হতো না। তাঁর লেখা ‘আমার হাতেই নিলাম আমার নির্ভরতার চাবি; তুমি আমার আকাশ তেকে সরাও তোমার ছায়া, তুমি বাংলা ছাড়ো।’ কবিতার এই লাইন দ্বারা বোঝা যায় তিঁনি ছিলেন একজন দীপ্তিবান ও সাহসী মানুষ। বঙ্গবন্ধুর ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এই বক্তব্যের সাথে কবি সিকান্দার আবু জাফরের বক্তব্যের তাৎপর্য একই।
সাতক্ষীরা জেলাকে স্মৃতিচারণ করে তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরার মানুষ অনেক ভাগ্যবান। অনেক অসাধারণ কবি,সাহিত্যিক ও গুনিজনকে সাতক্ষীরাবাসী পেয়েছেন । তারা শুধু সাতক্ষীরা, বাংলাদেশ নয়, পশ্চিমবঙ্গকেও আলোকিত করেছেন। সাতক্ষীরা নৈরিক কোনের এক অসাধারণ জনপদ, অসাধারণ সুন্দর। একদিকে সুন্দরবন, একদিকে পশ্চিমবঙ্গ আর একদিকে অনেক নদী। সাতক্ষীরায় প্রাচর্যেও কোন শেস নেই। সাতক্ষীরার আম, সজনে, চিংড়ী, ওল, খেজুরের গুড়, দুধ মিষ্টিসহ অনেক জিনিস শুধু বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় নয়, বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ঐশর্যে পরিপূর্ণ একটি জনপদ সাতক্ষীরা জেলা। সাতক্ষীরার মানুষ ও অত্যন্ত উদার ও বন্ধুসুলভ। আমি একান থেকে চলেগেলেও এখনও বহু মানুষ আমাকে মনে করেন। আমাকে ফোন করেন, আমার অফিসে যেয়ে আমাকে দেখে আসেন। পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সম্পর্ক। সাতক্ষীরার মানুষের সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও তাদের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেছে। আমি এখনও মাঝে মাঝে ভাবি আবার যদি সাতক্ষীরায় ফিরে আসতে পারতাম!
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ ইফতেখার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, একুমে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী(কবির ছোট ভাই) সৈয়দ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ জাকির হোসেন, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ প্রমূখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফরিদ হোসেন।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ ফারুক ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ফারুক হোসেনকে কবি সিকান্দার আবু জাফর সম্মাননা পদকে ভূষিত করা হয় এছাড়া কবির লেখা একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।
More News


সম্পাদক র্কতৃক প্রকাশিত

e-mail: alorparosh@gmail.com- --